যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় রাশিয়া-ইউক্রেন নেতাদের সাথে বসতে আগ্রহী ট্রাম্প



ঢাকা, ৩ জুন ২০২৫ – যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে চান বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই উদ্দেশ্যে তিনি প্রয়োজনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি—উভয়ের সাথেই আলোচনায় বসতে প্রস্তুত আছেন। তার এই আগ্রহ এমন এক সময়ে প্রকাশ পেল, যখন দীর্ঘস্থায়ী এই সংঘাতের কোনো সুস্পষ্ট সমাধান দেখা যাচ্ছে না।

গতকাল সোমবার (২ জুন) তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ (Truth Social) দেওয়া এক পোস্টে ডাম্প এই ঘোষণা দেন। পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, "আমি এখনই শান্তি চাই, এবং প্রয়োজনে আমি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন উভয়ের সাথে একসাথে বসতে প্রস্তুত।" তিনি আরও যোগ করেন, "এটা আমার জন্য সম্মানজনক হবে।"

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছেন যে, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের ঘটনা ঘটত না। তিনি প্রায়শই বলে থাকেন যে, যদি তিনি ক্ষমতায় থাকতেন, তবে তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই যুদ্ধ বন্ধ করে দিতে পারতেন। তার এই মন্তব্যের উদ্দেশ্য ছিল সম্ভবত আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার পররাষ্ট্রনীতিকে আরও শক্তিশালীভাবে তুলে ধরা।

ট্রাম্পের এই প্রস্তাব এমন সময়ে এসেছে যখন ইউক্রেন যুদ্ধ এক নতুন ধাপে প্রবেশ করেছে। যুদ্ধবিরতির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এবং উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পক্ষ থেকে শান্তি আলোচনার চেষ্টা করা হলেও, তা কার্যকর ফল দিতে পারেনি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই প্রস্তাব যদি বাস্তবে রূপ নেয়, তাহলে এটি বিশ্ব কূটনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে। তবে, এটি কতটুকু বাস্তবসম্মত হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, ইউক্রেন বারবার বলে আসছে যে, রাশিয়ার সকল সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা কোনো শান্তি আলোচনায় বসবে না। অন্যদিকে, রাশিয়াও তাদের দখলকৃত অঞ্চলগুলো থেকে সরে আসতে রাজি নয়।

এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, ট্রাম্পের এই প্রস্তাবটি মূলত তার ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রচারণার অংশ, যেখানে তিনি নিজেকে একজন শক্তিশালী 'শান্তি-নির্মাতা' হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ইউক্রেন যুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবেই রয়ে গেছে। ট্রাম্পের এই নতুন প্রস্তাব যুদ্ধের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে কিনা, অথবা এটি কেবলই একটি রাজনৈতিক চাল কিনা, তা আগামী দিনগুলোতেই স্পষ্ট হবে।


Post a Comment

Previous Post Next Post