![]() |
| করমুক্ত আন্তর্জাতিক পুরস্কার: ৪টিতে অর্থ পান না বিজয়ীরা, সম্মানই মূল পুরস্কার |
ঢাকা, ৪ জুন ২০২৫ – ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারকে আয়কর থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য যেমন একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, তেমনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের সম্মান বয়ে আনা গুণীদের জন্য এক স্বীকৃতি। তবে, এই দশটি পুরস্কারের মধ্যে চারটি পুরস্কারের বিজয়ীরা কোনো আর্থিক সুবিধা পান না। এগুলোর মূল পুরস্কার হলো সম্মান, স্বীকৃতি এবং বিশ্ব দরবারে তাদের কাজের গুরুত্ব তুলে ধরা।
গতকাল মঙ্গলবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এই ঘোষণা দেন। এই দশটি পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে, শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের মতো বিশ্বখ্যাত পুরস্কারও।
যে ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার আয়করমুক্ত করা হয়েছে:
নতুন বাজেটে যে ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারকে আয়করমুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলো হলো:
১. নোবেল পুরস্কার: বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞান, সাহিত্য, শান্তি এবং অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের জন্য দেওয়া হয়।
২. ফিল্ডস মেডেল: গণিতের জন্য দেওয়া সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার।
৩. উলফ প্রাইজ: বিজ্ঞান ও শিল্পকলার বিভিন্ন শাখায় অসামান্য অবদানের জন্য দেওয়া হয়।
৪. প্রিৎজকার আর্কিটেকচার প্রাইজ: স্থাপত্যের জন্য বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার।
৫. টার্নার প্রাইজ: ব্রিটিশ সমসাময়িক শিল্পকলায় অসামান্য অবদানের জন্য দেওয়া হয়।
৬. র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার: এশিয়ার নোবেল হিসেবে পরিচিত, জনসেবা ও নেতৃত্বদানে অবদানের জন্য দেওয়া হয়।
৭. ইনফোসিস প্রাইজ: বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের বিভিন্ন শাখায় অসামান্য ভারতীয়দের দেওয়া হয়।
৮. আলফোর্ড ডালহৌসি রোটেনবার্গ পুরস্কার: নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে গবেষণা ও অবদানের জন্য দেওয়া হয়।
৯. এবেল প্রাইজ: গণিতবিদদের জন্য নরওয়ে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার।
১০. শিটাডেল পুরস্কার: একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার, যা মূলত প্রযুক্তি, অর্থনীতি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে দেওয়া হয়।
অর্থ পুরস্কারবিহীন চারটি পুরস্কার:
এই ১০টি পুরস্কারের মধ্যে ৪টি পুরস্কারে বিজয়ীরা সরাসরি কোনো আর্থিক পুরস্কার পান না। এগুলোর প্রধান মূল্য হলো এর সম্মান এবং এর মাধ্যমে যে আন্তর্জাতিক পরিচিতি তৈরি হয়, তা। এই চারটি পুরস্কার হলো:
১. ফিল্ডস মেডেল: এটি মূলত তরুণ গণিতবিদদের (৪০ বছরের কম বয়সী) দেওয়া হয় এবং এর সঙ্গে সাধারণত কোনো বড় অঙ্কের অর্থ পুরস্কার থাকে না, বরং এটি গণিত জগতে তাদের উচ্চতর প্রতিভার স্বীকৃতি।
২. প্রিৎজকার আর্কিটেকচার প্রাইজ: এই পুরস্কারের সঙ্গে নগদ কোনো অর্থ পুরস্কার যুক্ত থাকে না, বরং বিজয়ীকে একটি ব্রোঞ্জ মেডেল এবং একটি স্মারক হিসেবে একটি প্রশংসাপত্র দেওয়া হয়।
৩. টার্নার প্রাইজ: এই পুরস্কারে শিল্পীদের কাজ প্রদর্শিত হয় এবং বিজয়ী হন, তবে আর্থিক পুরস্কার খুব সীমিত বা প্রতীকী। এর মূল উদ্দেশ্য হলো সমসাময়িক শিল্পকলার প্রচার।
৪. আলফোর্ড ডালহৌসি রোটেনবার্গ পুরস্কার: এটিও মূলত গবেষণা ও অবদানের স্বীকৃতিমূলক পুরস্কার, যেখানে আর্থিক পুরস্কারের চেয়ে সম্মানই বড়।
আয়করমুক্তির গুরুত্ব:
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই পুরস্কারগুলোকে আয়কর থেকে অব্যাহতি দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর ফলে, ভবিষ্যতে যদি কোনো বাংলাদেশি নাগরিক এই পুরস্কারগুলো অর্জন করেন, তবে তারা অর্জিত অর্থ বা সম্মানীর ওপর কোনো কর দিতে বাধ্য থাকবেন না। এটি দেশের গুণীজনদের আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জনে আরও উৎসাহিত করবে এবং তাদের প্রাপ্ত সম্মানকে আর্থিক বোঝা থেকে মুক্ত রাখবে। এটি বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করবে।
.jpeg)
Post a Comment