ইউনূস যাচ্ছেন? অন্তর্বর্তী সরকার টালমাটাল


 পদত্যাগের ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে স্পষ্ট করেছেন, যদি কাজ করতে না পারেন, তবে পদে থাকার যৌক্তিকতা নেই।


রাজনৈতিক অচলাবস্থায় হতাশা প্রকাশ

তিনি ক্ষোভ জানিয়েছেন প্রশাসনিক অসহযোগিতা, আন্দোলনের কারণে স্থবিরতা ও সংস্কারে অগ্রগতির অভাব নিয়ে।


নাহিদের অনুরোধ, কিন্তু অনড় সংকল্প

এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম তাঁকে অনুরোধ করেছেন দায়িত্বে থাকতে, কিন্তু ইউনূস নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় উদ্বেগ বাড়ছে।


রাজনৈতিক অস্থিরতায় আক্রান্ত বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উপদেষ্টা পরিষদের সর্বশেষ বৈঠকে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যদি তিনি কার্যকরভাবে কাজ করতে না পারেন, তাহলে পদে থাকার কোনো মানে হয় না। তাঁর এমন বক্তব্য দেশজুড়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।


বৈঠকে আলোচনায় উঠে আসে—প্রতিদিন সড়ক অবরোধ, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের অভাব, প্রশাসনের অসহযোগিতা এবং কাঙ্ক্ষিত সংস্কারে অগ্রগতির অভাব। এই পরিস্থিতিতে তিনি নিজেকে কার্যত “জিম্মি” মনে করছেন বলে উল্লেখ করেন। এমনকি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, “আমি কেন থাকব?”


তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতিতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন আদৌ সম্ভব কিনা, তা নিয়েও তাঁর মধ্যে সংশয় রয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন ব্যালট ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঠেকাতে পারবে কিনা, তা নিয়েও তিনি সন্দিহান। তাঁর আশঙ্কা, একটি ব্যর্থ নির্বাচনের দায় তাঁর কাঁধেই বর্তাবে।


এই প্রসঙ্গে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার কথাও উঠেছে। এমন একটি ভাষণের খসড়া পর্যন্ত তৈরি করা হয়েছে, যেখানে তিনি পরিস্থিতির বাস্তবতা তুলে ধরতে চেয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত তা প্রচার না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে—আপাতত।


বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে গিয়ে দেখা করেন। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগ নিয়ে “ভাবছেন”, এবং কাজ করতে না পারার কারণে তিনি মানসিকভাবে চাপে আছেন।


নাহিদ ইসলাম তাঁকে অনুরোধ করেছেন, যেন তিনি দায়িত্বে থেকে সব দলের মধ্যে ঐক্য আনার চেষ্টা চালিয়ে যান। তাঁর কথায়, “আমাদের গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা, জাতীয় নিরাপত্তা, দেশের ভবিষ্যৎ—সব কিছু মিলিয়ে আমরা চাই উনি শক্ত থাকুন।”


এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, অধ্যাপক ইউনূস সত্যিই পদত্যাগ করবেন কি না। যদি করেন, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ ও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আবারও অনিশ্চয়তার কালো ছায়া নেমে আসবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post