চট্টগ্রামে চামড়া কিনে বিপাকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা, দাম পাচ্ছেন না

কোরবানির ঈদের পর চট্টগ্রাম নগরের একটি চামড়ার আড়তে স্তূপ করে রাখা কাঁচা চামড়া, যেখানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা হতাশা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।

কোরবানির ঈদ শেষ, আর চট্টগ্রামের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। লাভের আশায় চামড়া কিনলেও আড়তদারদের কাছ থেকে ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না তারা। অনেকে লোকসানে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাদের হতাশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতি প্রতি বছরই কমবেশি দেখা যায়, কিন্তু এবার যেন তা আরও তীব্র।

জানা গেছে, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পাড়া-মহল্লা থেকে কোরবানিদাতাদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করেন। কিন্তু চামড়া প্রক্রিয়াকরণের জ্ঞান এবং সঠিক বাজার সম্পর্কে ধারণার অভাবে তারা প্রায়শই ক্ষতিগ্রস্ত হন। সরকার লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলেও, কাঁচা চামড়া কেনার ক্ষেত্রে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা প্রায়শই তার চেয়ে বেশি দামে কিনে ফেলেন, যা তাদের লোকসানের কারণ হয়।

চট্টগ্রামের আড়তদাররা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামে লবণযুক্ত চামড়া কেনা হয়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যে দামে চামড়া কিনে আনছেন, তাতে তাদের লবণের খরচ, শ্রমিকের মজুরি এবং পরিবহণ ব্যয় যোগ করলে লোকসান হয়। বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতি বারবার মৌসুমি বিক্রেতাদের সতর্ক করেছে।

এবার চট্টগ্রামে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে গরুর চামড়া প্রায় ৩ লাখ এবং ছাগল ও ভেড়ার চামড়া প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ। চট্টগ্রামের একমাত্র সচল ট্যানারি 'রিফ লেদার লিমিটেড' মাত্র ১ লাখ চামড়া নিতে প্রস্তুত। বাকি চামড়ার জন্য ঢাকার ট্যানারিগুলোর ওপর নির্ভর করতে হয়। ফলে চামড়া ঢাকায় পাঠাতে পরিবহন খরচ এবং অতিরিক্ত আড়ত খরচ বেড়ে যায়।

অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী অভিযোগ করছেন, আড়তদাররা একজোট হয়ে কম দামে চামড়া কিনছেন। চামড়া সংরক্ষণে লবণের প্রয়োজন হওয়ায় এবং পচে যাওয়ার ভয়ে দ্রুত বিক্রি করতে হয়, যা আড়তদারদের জন্য সুযোগ তৈরি করে। সবমিলিয়ে, লাভের আশায় এসে অনেকেই হতাশ হয়ে ফিরছেন।

 তারিখ: June 7, 2025

 লেখক: Kazi Fahsin

 প্রকাশক: নভোকণ্ঠ (Novonicle)


Post a Comment

Previous Post Next Post