ঢাকা, ২ জুন ২০২৫ – আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে, তখন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে তাদের অবস্থান কিছুটা 'নমনীয়' করেছে। দলটি জানিয়েছে, তারা ডিসেম্বরের শেষ থেকে আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে যেকোনো সময় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে। তবে, তাদের প্রধান দাবি, একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই এই নির্বাচন হতে হবে।
গতকাল রবিবার (১ জুন) গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও দলের মুখপাত্র মতিউর রহমান আকন্দ এই তথ্য জানান। তার এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন সরকার আগামী জানুয়ারিতেই নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে এবং বিরোধী দলগুলো বিশেষ করে বিএনপি ও তার মিত্ররা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে অনড় অবস্থান নিয়েছে।
মতিউর রহমান আকন্দ তার বিবৃতিতে বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। এই লক্ষ্যে আমরা ডিসেম্বর মাসের শেষ দিক থেকে আগামী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে যেকোনো সময় একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে।"
তিনি আরও বলেন, "কিন্তু আমাদের মূল দাবি হচ্ছে, একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হতে পারে না বলে আমাদের বিশ্বাস।"
জামায়াতের এই নমনীয় অবস্থানকে অনেকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন। এর মাধ্যমে তারা একদিকে যেমন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে না আসার বার্তা দিচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা নিয়ে একটি সমঝোতার পথ খোলা রাখতে চাইছে। এর আগে, জামায়াত বিএনপি নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সরব ছিল এবং বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, "আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই সময়সীমার কথা বলছি। দেশের অর্থনীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই।"
সরকার অবশ্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তারা সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর। এমন পরিস্থিতিতে জামায়াতের এই নতুন প্রস্তাব রাজনৈতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিরোধী দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় এবং সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে এটি কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে।
Post a Comment