❖ প্রাণ বাঁচাতে সেনানিবাসে আশ্রয়
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়লে, নিরাপত্তাহীনতায় পড়া রাজনীতিক, প্রশাসনিক ও পুলিশ কর্মকর্তারা সেনানিবাসে আশ্রয় নেন।
❖ আইএসপিআরের ব্যাখ্যা ও মানবিক অবস্থান
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আশ্রয়দাতাদের জীবন রক্ষা করাই ছিল একমাত্র উদ্দেশ্য, এটি কোনো রাজনৈতিক পক্ষপাত নয়।
❖ পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ, বিভ্রান্তি প্রতিরোধে বার্তা
জনগণকে বিভ্রান্তি থেকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়ে আইএসপিআর তালিকাসহ ব্যাখ্যা প্রকাশ করেছে — পুরো ঘটনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাস। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে দেশের রাজনৈতিক মানচিত্র বদলে যায়। সরকার পতনের পরপরই এক ভয়াবহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় বাংলাদেশজুড়ে। হামলা হয় থানা ও সরকারি দপ্তরে, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বাড়িতে চলে আগুন দেওয়ার ঘটনা। মব জাস্টিস, চুরি, ডাকাতির মতো অপরাধ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীসহ সর্বত্র। এমন এক বিপজ্জনক প্রেক্ষাপটে, শত শত মানুষ নিজের ও পরিবারের জীবন বাঁচাতে আশ্রয় চায় সেনানিবাসে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তখন মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে আশ্রয় প্রার্থীদের সাময়িক নিরাপত্তা দেয়। আইএসপিআরের বিবৃতিতে জানানো হয়, কারও পরিচয় যাচাই করার সুযোগ তখন ছিল না—জীবন রক্ষাই ছিল মূল অগ্রাধিকার। এই প্রক্রিয়ায় ৬২৬ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়, যাদের মধ্যে ছিলেন ২৪ জন রাজনৈতিক নেতা, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন বেসামরিক কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ সদস্য (এর মধ্যে ৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য), পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ কর্মকর্তা ও পরিবারসহ ৫১ জন।
পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে অধিকাংশ মানুষ এক-দুই দিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন। পাঁচজনকে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা থাকার কারণে আইনানুগভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে ১৮ আগস্ট একটি প্রাথমিক তালিকা পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। আজ সেই প্রক্রিয়ার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেছে আইএসপিআর, যাতে জনসচেতনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়।
আইএসপিআর-এর মতে, কিছু গোষ্ঠী সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। এজন্যই এই তালিকা ও ব্যাখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে প্রকৃত তথ্য মানুষ জানতে পারে। তারা আহ্বান জানিয়েছে, বিভ্রান্তি ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে এবং সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধতার ওপর আস্থা রাখতে।
এই পদক্ষেপকে দেশের রাজনৈতিক-সামাজিক বাস্তবতায় একটি নজির হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

Post a Comment