আইপিএলে কোটি টাকার জরিমানা: স্লো ওভার রেটেই বড় লোকসান, পন্তের ঘাড়ে সবচেয়ে বেশি বোঝা!


ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) মানেই শুধু চার-ছক্কা আর উত্তেজনা নয়, এখানে মোটা অঙ্কের জরিমানাটাও নিয়মিত ব্যাপার। এবারের আইপিএলে দেখা যাচ্ছে, স্লো ওভার রেটের কারণে দল ও খেলোয়াড়দের পকেট থেকে বেরিয়ে গেছে কোটি কোটি রুপি। সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা কিন্তু হয়েছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের, আর ব্যক্তিগতভাবে এর ভার সবচেয়ে বেশি বইতে হয়েছে তাদের অধিনায়ক ঋষভ পন্তকে।

প্রথম আলোর তথ্য অনুযায়ী, এবারের আইপিএলে একক খেলোয়াড় হিসেবে সবচেয়ে বেশি জরিমানা গুনতে হয়েছে ঋষভ পন্তকেই। আইপিএলের নিলামে ২৭ কোটি রুপিতে বিক্রি হয়ে তিনি রেকর্ড গড়েছিলেন, কিন্তু মাঠে তার পারফরম্যান্স সেভাবে ঝলসে ওঠেনি। আর জরিমানার দিক থেকে তিনি আরও বড় রেকর্ড গড়েছেন। স্লো ওভার রেটের কারণে মোট ৬৬ লাখ রুপি জরিমানা দিতে হয়েছে তাকে। এর মধ্যে দুবার মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে এবং একবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে স্লো ওভার রেটের অপরাধে তার জরিমানা হয়। প্রথমবার ১২ লাখ, দ্বিতীয়বার ২৪ লাখ এবং তৃতীয়বার ৩০ লাখ রুপি জরিমানা দিতে হয়েছে তাকে।

শুধু পন্তই নন, লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস দল হিসেবেও সবচেয়ে বেশি জরিমানা দিয়েছে। এবারের আইপিএলে তারা মোট তিনটি ম্যাচে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওভার শেষ করতে পারেনি। এই তিন ম্যাচের জন্যই দলটিকে বড় অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়েছে। আইপিএলের নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমবার স্লো ওভার রেটের অপরাধ করলে শুধু অধিনায়ককে জরিমানা করা হয়। কিন্তু দ্বিতীয়বার ও তৃতীয়বার অপরাধ করলে অধিনায়কের পাশাপাশি পুরো একাদশের (ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারসহ) অন্য খেলোয়াড়দেরও জরিমানার মুখে পড়তে হয়। যেমন, পন্তের তৃতীয়বার জরিমানা হওয়ার পর তার সঙ্গে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারসহ দলের প্রত্যেককে ১২ লাখ রুপি করে অথবা তাদের ম্যাচ ফির ৫০ শতাংশ (যেটা কম) জরিমানা দিতে হয়েছে।

লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ছাড়াও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকেও বড় অঙ্কের জরিমানা গুনতে হয়েছে। আরসিবির অধিনায়ক রজত পতিদার এবং মুম্বাইয়ের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ারও ৩৬ লাখ রুপি করে জরিমানা হয়েছে (প্রথমবার ১২ লাখ, দ্বিতীয়বার ২৪ লাখ)। এই দুই দলের খেলোয়াড়দেরও ৬ লাখ রুপি বা ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ করে জরিমানা দিতে হয়েছে।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্যও কিছু খেলোয়াড়কে জরিমানা করা হয়েছে। যেমন, লক্ষ্ণৌর দিগ্বিজেশ সিং রাঠী এবং সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অভিষেক শর্মাকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য জরিমানা করা হয়েছে। দিগ্বিজেশকে ৫০ শতাংশ ম্যাচ ফি জরিমানা করা হয়েছে এবং এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধও করা হয়েছিল।

এবারের আইপিএলে স্লো ওভার রেটের নিয়মে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে তৃতীয়বার অপরাধ করলে অধিনায়ককে এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হতো। তবে ২০২৫ মৌসুম থেকে সেই নিয়ম বাতিল করা হয়েছে। এখন ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয় এবং আর্থিক জরিমানা বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে খেলোয়াড়দের পকেট থেকে সরাসরি অর্থ চলে যাচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে তাদের জন্য একটি বড় ক্ষতি। দলগুলোর জন্যও এটা একটা আর্থিক বোঝা, কারণ তাদের খেলোয়াড়দের বিশাল অঙ্কের জরিমানা গুণতে হচ্ছে।



Post a Comment

Previous Post Next Post