সেনাপ্রধান বললেন, জানি না—সংস্কার কিভাবে হচ্ছে!


 ❖ অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা, তবে অন্ধকারে সেনাবাহিনী

সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান জানান, তিনি সংস্কারের পদ্ধতি বা অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত নন, এবং এ বিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনা হয়নি।


❖ নিরপেক্ষতা ও সততার বার্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি

নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে সততা বজায় রাখতে এবং কোন পক্ষপাতমূলক আচরণ না করতে নির্দেশ দেন সেনাপ্রধান।


❖ মানবিক করিডর বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য চান

সেনাপ্রধান মনে করেন, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে নির্বাচিত সরকারের অনুমোদন ও রাজনৈতিক ঐক্যমতের প্রয়োজন।

ঢাকা সেনানিবাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান পরিষ্কার ভাষায় বলেন, তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন। তবে, তিনি এও জানান যে, চলমান সংস্কার বা নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোর বিষয়ে তাকে কিছুই জানানো হয়নি—এমনকি পরামর্শও নেওয়া হয়নি।


এই বক্তব্য দেশের সামরিক নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যে একটি দূরত্বের ইঙ্গিত দেয়। সেনাপ্রধান বলেন, তার বাহিনী কোনোভাবেই দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়াবে না, কাউকে তা করতেও দেবে না।


তিনি সেনাসদস্যদের নির্দেশ দেন, ভবিষ্যতের যেকোনো নির্বাচনী দায়িত্ব যেন সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা হয়। সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার ওপর জোর দেন তিনি।


একইসঙ্গে, দেশের বর্তমান অরাজক পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন সেনাপ্রধান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বেসামরিক প্রশাসনের কাঙ্ক্ষিত পুনর্গঠন না হওয়ায় সঙ্কট আরও ঘনীভূত হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।


রাখাইন রাজ্যে প্রস্তাবিত মানবিক করিডর সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে, সেনাপ্রধান বলেন, এটি "স্পষ্ট নয়", এবং এই ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে তা নির্বাচিত সরকার এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য থেকেই আসা উচিত।


তিনি সরাসরি বলেন, জাতীয় স্বার্থেই সব সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত, কোনো গোপন বা একতরফা উদ্যোগ গ্রহণ অগ্রহণযোগ্য। সেনাপ্রধান আরও বলেন, আগস্ট থেকে সেনাবাহিনীকে নানা অপচেষ্টা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা দেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।


রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মন্তব্যে উঠে এসেছে, সেনাবাহিনীর মতামত উপেক্ষা করে সংস্কার এগিয়ে নেওয়া রাষ্ট্রীয় প্রজ্ঞার ঘাটতির পরিচায়ক। তারা মনে করেন, সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রীয় সংস্কারে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল।


সেনাপ্রধানের এই বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। দেশের সংকটকালে সেনাবাহিনীর সাহসী ভূমিকা এবং নেতৃবৃন্দের উন্মুক্ত বক্তব্যকে অনেকে দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post