ঢাকা, ২ জুন ২০২৫ – দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মানি লন্ডারিং মামলায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে আরও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার (২ জুন) ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন। এর আগে, গত ২৮ মে মেননকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল, যার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আজ নতুন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আজ রাশেদ খান মেননকে আদালতে হাজির করা হলে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক সৈয়দ তাহসিনুল হক তার বিরুদ্ধে আরও সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটনের জন্য তাকে আরও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
অন্যদিকে, রাশেদ খান মেননের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। তারা যুক্তি দেন যে, মেনন একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং অসুস্থ। তাছাড়া, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে গত ২৭ মে একটি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন। মামলা দায়েরের পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে, তার ছেলে কানাডার নাগরিক রাশিকুল হাসান মেনন ও তার স্ত্রীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগ ওঠে। রাশেদ খান মেননের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে দুদক দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চালিয়ে আসছিল।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, কানাডায় রাশিকুল হাসান মেনন ও তার স্ত্রীর নামে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। এই অর্থের উৎস এবং এর সাথে রাশেদ খান মেননের জড়িত থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখতেই তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এই মামলায় ইতিমধ্যে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং কিছু তথ্যও পাওয়া গেছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
রাশেদ খান মেননের রিমান্ড মঞ্জুরের ঘটনা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। তার দল ওয়ার্কার্স পার্টি এই গ্রেপ্তার এবং রিমান্ডকে 'রাজনৈতিক হয়রানি' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তাদের দাবি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে বিরোধী জোটকে দুর্বল করার জন্যই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
.jpeg)
Post a Comment