![]() |
লস অ্যাঞ্জেলেসের রাস্তায় ইউনিফর্ম পরা মার্কিন ন্যাশনাল গার্ড এবং মেরিন সেনারা বিক্ষোভকারীদের ভিড়ের মধ্যে টহল দিচ্ছেন। |
ইরাক-সিরিয়ার চেয়ে বেশি সেনা এখন লস অ্যাঞ্জেলেসে: ট্রাম্পের নতুন কৌশল
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটছে। ইরাক ও সিরিয়ার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোর চেয়েও বেশি সংখ্যক মার্কিন সেনা বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসে মোতায়েন করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এমন বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলেসে অবৈধ অভিবাসনবিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এই বিক্ষোভ দমনের জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ডের পাশাপাশি শত শত মার্কিন মেরিন সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, প্রায় ৪ হাজার ন্যাশনাল গার্ডের সঙ্গে অন্তত ৭০০ মেরিন সেনা লস অ্যাঞ্জেলেসে মোতায়েন করা হয়েছে, যা শহরটির পরিস্থিতিকে আরও সামরিকীকরণ করবে।
তুলনামূলকভাবে, সিরিয়ায় বর্তমানে প্রায় ৯০০ মার্কিন সেনা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে নিয়োজিত আছে। ইরাকে ঠিক কতজন সেনা মোতায়েন আছে তা মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রকাশ না করলেও, ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী সেখানে প্রায় ২,৫০০ সেনা ছিল। এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে, লস অ্যাঞ্জেলেসের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সামাল দিতে ইরাক বা সিরিয়ার চেয়েও বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এটিকে 'অপ্রয়োজনীয়, অবৈধ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে মন্তব্য করেছেন। নিউজমের মতে, সেনা মোতায়েন আসলে আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে, যা একটি বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতিকে আরও উসকে দিচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, অবৈধভাবে বসবাসকারী ব্যক্তিদের ধরতে এবং বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসকে 'মুক্ত' করতে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এটি মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। লস অ্যাঞ্জেলেসের এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতি এবং গণবিক্ষোভ দমনের কৌশল নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি করেছে।
তারিখ: June 12, 2025
লেখক: Kazi Fahsin
প্রকাশক:
Post a Comment