বিশ্বজুড়ে এখনো ধূমপানের প্রবণতা থামছে না—চোখ কপালে তোলার মতো তথ্যই জানাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। সংস্থাটির সাম্প্রতিক প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪ সালেও বিশ্বে প্রায় ১৩০ কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ পুরুষ, তবে নারীদের মধ্যেও ধীরে ধীরে বাড়ছে এই অভ্যাস।
বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতেই এই আসক্তির হার সবচেয়ে বেশি। WHO বলছে, প্রায় ৮০ শতাংশ ধূমপায়ী এমন দেশগুলোতেই বসবাস করে। মানে, অর্থনৈতিক সংকট আর সচেতনতার অভাব মিলিয়ে মানুষজন তামাকের ভয়াবহতা বুঝেও বের হতে পারছে না এই চক্র থেকে।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর ৮০ লাখের বেশি মানুষ তামাকজনিত কারণে মারা যায়। এর মধ্যে প্রায় ১৩ লাখ মানুষ ধূমপান করে না, কিন্তু পরোক্ষ ধোঁয়ার শিকার হয়ে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ থেকে শুরু করে অসংখ্য অসুখের মূলেই তামাক।
WHO-এর মতে, সচেতনতা বাড়ানো, তামাকজাত পণ্যের দাম বাড়ানো, বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা, ধূমপানমুক্ত পাবলিক স্পেস তৈরি করাই এখন সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ। তামাকবিরোধী নীতিগুলো যেখানে কঠোর, সেখানে ধূমপানকারীর হার দ্রুত কমেছে—এমন উদাহরণও আছে।
তবে, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে—অনেক দেশেই এখনো নীতির চেয়ে ব্যবসায়িক লাভকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণদের লক্ষ্য করে নানা ছদ্মবেশে বিক্রি হচ্ছে ই-সিগারেট ও নিকোটিন পণ্য, যেগুলো নতুন প্রজন্মকে তামাকে টেনে আনছে নতুন কৌশলে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও একই রকম চিত্র। শহর থেকে গ্রাম, শিক্ষার্থী থেকে গৃহশ্রমিক—ধূমপান বা চিবিয়ে খাওয়া তামাকপণ্যের ব্যবহার কমছে না। সরকারি উদ্যোগ থাকলেও, মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে ঘাটতি আছে—এমন অভিযোগ রয়েছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
Post a Comment