হার্ভার্ডের সঙ্গে সব সরকারি চুক্তি বাতিল: ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ, শিক্ষাঙ্গনে তোলপাড়


 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত সব সরকারি আর্থিক চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।1 মঙ্গলবার (২৭ মে) মার্কিন এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।2 এই নতুন সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও সম্মানজনক এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নতুন করে রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের শিক্ষা খাত নিয়ে বেশ কড়া অবস্থান নিচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন, যার মধ্যে হার্ভার্ডের মতো স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ অন্যতম।3 ট্রাম্প প্রশাসন অভিযোগ করছে, হার্ভার্ড এবং একই সারির কিছু বিশ্ববিদ্যালয় 'অতিমাত্রায় বামপন্থী'।4 তাদের দাবি, এই প্রতিষ্ঠানগুলো ক্যাম্পাসে ইহুদি বিদ্বেষকে মদদ দিচ্ছে এবং ভর্তি ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বৈষম্যমূলক নীতি অনুসরণ করছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছিল এবং হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি বাতিল করেছিল।5 সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে হার্ভার্ড প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল, যেখানে আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তে সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করে।6 কিন্তু তাতেও ট্রাম্প প্রশাসন দমেনি। উল্টো, হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের ফেডারেল অনুদান অন্যত্র, বিশেষ করে মার্কিন ট্রেড স্কুলগুলোতে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।

এই পরিস্থিতিতে হার্ভার্ডের সঙ্গে সব সরকারি আর্থিক চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত এলো। এই পদক্ষেপের ফলে হার্ভার্ডের গবেষণা কার্যক্রম এবং অন্যান্য ফেডারেল অর্থায়িত প্রকল্পগুলো বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৭ শতাংশ শিক্ষার্থী বিদেশি, যারা প্রতিষ্ঠানটির আয়ের একটি বড় উৎস। তাই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীকে স্থানান্তরিত হতে হতে পারে, যা হার্ভার্ডের জন্য একটি বড় ধাক্কা হবে।

হোয়াইট হাউস বা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এখনো এই সর্বশেষ সিদ্ধান্তের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ মার্কিন রাজনীতিতে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা এবং তাদের স্বাধীন কার্যক্রমে সরকারি হস্তক্ষেপের বিষয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করবে।


Post a Comment

Previous Post Next Post