দক্ষিণ কোরীয় এক মা অভিযোগ করেছেন, তাঁর মেয়ে রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে দত্তক দেওয়া হয়েছিল।
-
মেয়েকে ফিরে পাওয়ার পরও কেউ দুঃখ প্রকাশ করেনি বা দায় নেয়নি, তাই তিনি সরকারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন।
-
দক্ষিণ কোরিয়ার দত্তক নীতিতে অতীতে ছিল ব্যাপক দুর্নীতি, যার শিকার হয়েছেন হাজারো পরিবার।
দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক হান তে-সুন তাঁর চার বছরের মেয়েকে হারিয়েছিলেন ১৯৭৫ সালে। দীর্ঘ ৪৪ বছর পর, ২০১9 সালে মেয়েকে খুঁজে পান তিনি—মেয়েটি যুক্তরাষ্ট্রে একটি দম্পতির কাছে দত্তক নেওয়া হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, হান আবিষ্কার করেন মেয়েকে একটি অনাথ শিশু হিসেবে দেখিয়ে জাল নথির মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো হয়েছিল।
তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, মেয়ে কিয়ং-হাকে সরাসরি অপহরণ করে একটি অনাথ আশ্রমে পাঠানো হয়েছিল। আশ্রমটি মেয়েকে দত্তক দেওয়ার জন্য এমনভাবে উপস্থাপন করে যেন সে পরিবারের কেউ নয়। হান বহুবার থানায় গিয়ে অভিযোগ করেছেন, পোস্টারে মেয়ের ছবি দিয়েছেন, এমনকি সন্দেহভাজন মেয়েকে নিজের বাসায় এনে বড় করেছেন—তবু কোথাও থেকে কোনো সহানুভূতি বা সাহায্য পাননি।
এই ঘটনার পেছনে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার অতীতের দত্তক নীতিতে দীর্ঘদিনের অব্যবস্থা। ১৯৭০-৮০ দশকে দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিশুদত্তক রপ্তানিকারক দেশ হয়ে উঠেছিল। অনেক সময় বেসরকারি সংস্থাগুলো শিশুকে বিদেশে পাঠাতে মিথ্যা তথ্য দিত বা অভিভাবকদের অজ্ঞাতে কাজ করত। মূলত লাভের উদ্দেশ্যেই এমন অনৈতিক কাজ চলত বছরের পর বছর।
হান তে-সুন বলেন, তাঁর সন্তান হারানোর ব্যথা এবং রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থার কারণে দীর্ঘসময় মেয়েকে না পাওয়ার কষ্টকে তিনি ক্ষমা করতে পারছেন না। তাই তিনি ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচারের দাবিতে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এটি শুধু একটি মায়ের গল্প নয়, বরং দক্ষিণ কোরিয়ার হাজারো ভুলে যাওয়া পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করে।

Post a Comment